জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল যেভাবে
বাংলাদেশে শিশুর জন্ম গ্রহণের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের সূত্র মতে, সারা দেশে প্রায় ১৬ কোটি ৮৮ লাখের বেশি মানুষের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এই নিবন্ধনটির প্রয়োজনীয়তা এখন প্রায় সর্বপ্রকার নাগরিক সেবাতেই কম-বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক নথিপত্র বা জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল অনেক বছর আগেই।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শিশুর জন্ম গ্রহণের পর তার জন্ম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। প্রতিটি শিশুর অধিকার রয়েছে যে, সে জাতীয়তা অর্জন করবে, তার নামকরণ হবে, পিতা মাতার পরিচয় জানবে এবং পিতা-মাতার হাতে পালিত হবে।
ঐতিহাসিক তথ্য মতে, ১৮৭৩ সালের ২ জুলাই তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার অবিভক্ত বাংলায় বা তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কিত আইন জারি করেছিল। তবে যুগে যুগে এর প্রয়োগ এই উপমহাদেশে খুবই কমে গিয়েছিল। ২০০১-২০০৬ সালে ইউনিসেফ-বাংলাদেশের সহায়তায় পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় শুরুর দিকে বাংলাদেশের ২৮ টি জেলায় এবং ৪টি সিটি কর্পোরেশনে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুনঃ
- এক বছরের কম বয়সী ৫৫ শতাংশ শিশুর জন্ম নিবন্ধন হয়নি
- ১৭টি কাজে জন্ম নিবন্ধন জরুরী, ৩টি কাজে মৃত্যু নিবন্ধন
- হাসপাতালে ভর্তিতে লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন
ইউনিসেফ-বাংলাদেশের এই জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রকল্প চলাকালীন সময়ে, অতীতের ১৮৭৩ সালের জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত আইন রদ ও রহিত করে বাংলাদেশ সরকার। এর বিপরীতে ২০০৪ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রবর্তন করা হয় “জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪”। পরবর্তীতে, ২০০৬ সালের ৩ জুলাই থেকে সারা বাংলাদেশে এই আইনটি কার্যকর করা হয়।
এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রকল্প নামে প্রকল্পটি চলমান থাকে। আর তৃতীয় পর্যায়ে ২০১৬ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১৬ কোটি ৮৮ লাখের বেশি মানুষ জন্ম নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। পাশাপাশি এখন থেকে শিশু জন্মগ্রহণের পর থেকেই নিবন্ধন কার্যক্রমের জোর দেওয়া হয়। এটি দেশের সামগ্রিক নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।