অনলাইনে বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে ২০২৫
নতুন বছরে আপনার শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরির জন্য আবেদন করতে চাইলে, বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে তা জেনে নিন।
অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরি জন্য আবেদন করে ঘরে বসেই আপনার শিশুর প্রাথমিক নাগরিকতা সনদ তৈরি করে নিতে পারবেন। তবে আবেদনের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়।
অনলাইনে আবেদন করলে ডকুমেন্টসের ছবি বা স্ক্যান কপি দিতে হয়। তারপর আবার সংশ্লিষ্ট ঠিকানার ইউনিয়ন পরিষদে/ পৌরসভা কার্যালয় ডকুমেন্টস গুলোর ফটোকপিও জমা দিতে হয়। উপযুক্ত ডকুমেন্টস ব্যতিত আবেদন বাতিল হতে পারে।
তাই শিশুর/ বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে তা সঠিকভাবে জেনে নিন এখানে।
বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে?
২০২৫ সালে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে EPI টিকা কার্ড, পিতা-মাতার জন্ম সনদের কপি, ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ ও একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হয়।
এছাড়াও শিশুর বয়সভেদে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মাঝে ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন শিশুর বয়স ০-৪৫ দিন হলে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হয়, শিশুর বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হলে কিছুটা ভিন্ন ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হয়। নিচে এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
অনলাইনে আবেদন করার সময় এসকল ডকুমেন্টগুলো ছবি তুলে কিংবা স্ক্যান করে ফাইল আকারে রাখতে হয়। সেই ফাইলের ফাইল সাইজ হতে হবে সর্বোচ্চ 2 MB। তারপর সেই ফাইল আপলোড করে আবেদন সাবমিট করতে হয় এবং পরবর্তীতে তা নিবন্ধকের কার্যালয়েও জমা দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ
- বড়দের জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে ২০২৫?
- জন্ম নিবন্ধন সেবা নির্বিঘ্নের জন্য Bdris সিস্টেম আপডেট
- একজন ব্যক্তির একাধিক জন্মসনদ অবৈধ ঘোষনা
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে?
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করতে শিশুর বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টস জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। নিচে শিশুদের জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে ডকুমেন্টসের তালিকা গুলো তুলে ধরা হলো:
বাচ্চার বয়স ০-৪৫ দিন হলে
- বাচ্চার ইপিআই টিকা কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্র
- পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের কপি
- হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
- আবেদনকারীর একটি মোবাইল নাম্বার
(বর্তমানে শিশুর টিকা দেওয়ার আগে জন্ম নিবন্ধন করার নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে। তাই জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে EPI টিকা কার্ড জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে, জন্মগ্রহণের সময় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করে তা জমা দিতে পারবেন।)
বাচ্চার বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে
- বাচ্চার EPI টিকা কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্র
- পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের কপি
- হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
- আবেদনকারীর একটি মোবাইল নাম্বার
- শিশু প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলে, প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
এছাড়াও যদি কোন শিশুর বয়স ৫ বছরের বেশি হয়, তাহলে তার বয়স প্রমাণের জন্য – কোনো সরকারি MBBS ডাক্তারের সাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র কিংবা পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং একটি ছদ্ম তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি প্রয়োজন হতে পারে।
শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে?
শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিতে হয়-
- EPI টিকা কার্ড
- পিতা-মাতার জন্ম সনদের কপি
- ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ
- একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হয়
সাধারণত এই কয়েকটি ডকুমেন্টস হলেই জন্ম নিবন্ধন তৈরির জন্য আবেদন করা যায়। এছাড়াও বয়স বেশি হলে আরো কিছু কাগজপত্র ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা কার্যালয় থেকে চাইতে পারে।
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি কাগজ লাগে?
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে শিশুর EPI টিকা কার্ড, পিতা-মাতার ডিজিটাল জন্ম সনদ, হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ, বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র, সচল মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি কাগজপত্র ও তথ্য লাগে।
যাইহোক, জন্ম সনদ তৈরি করতে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, সেগুলো সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন। নিচে এসকল ডকুমেন্টসগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:
(১) EPI টিকা কার্ড
শিশুর জন্ম গ্রহণের পর বিভিন্ন টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এগুলোর জন্য একটি কার্ড দেওয়া হয়, যা EPI (Expanded Program on Immunization) টিকা কার্ড নামে পরিচিত। এই কার্ডে শিশুর জন্ম তারিখ, নাম ও অন্যান্য তথ্য থাকে।
তাই বয়স ও পরিচয় নিশ্চিত করতে ছোট শিশুর জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে এর কপি দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
(২) ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ
প্রতিবছরের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার রিসিট জন্ম নিবন্ধন এর সময় নিবন্ধকের কার্যালয়ে দিতে হয়। এর কারণ হলো ট্যাক্স পরিশোধ ব্যতীত নাগরিকের সেবা দেওয়া হবে না। তাই ঠিকানার হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে প্রাপ্ত রশিদ জমা দিতে হবে।
(৩) পিতা-মাতার জন্ম সনদের কপি
আগে জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জন্ম সনদ বা nid card এর নাম্বার দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। তবে এখন নিবন্ধনকারীর পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের নাম্বার দেওয়া ঐচ্ছিক হলেও জন্ম সনদের কপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন নম্বর লিখে দিতে হবে।
(৪) মোবাইল নাম্বার
জন্ম নিবন্ধন এর সময় ওটিপি ভেরিফিকেশনের জন্য মোবাইল নাম্বার দিতে হয়। ওটিপি ভেরিফিকেশন ছাড়াও নিবন্ধন সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা ও তথ্য মূলক কার্যক্রমে আবেদনকারীর একটি সচল নাম্বার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ওটিপি ভেরিফিকেশন ব্যতীত আবেদন সম্পন্ন করা যায় না।
(৫) বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র
নতুন জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিশু কোন বিদ্যালয়ে বা মাদ্রাসায় ভর্তি থাকলে, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি প্রত্যয়ন পত্র দিতে হয়। মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরকৃত সেই প্রত্যয়ন পত্রে নিবন্ধনকারী শিশুর বাংলা ও ইংরেজি নাম শুদ্ধভাবে উল্লেখ রাখতে হয়। সেখানে দেওয়া নামের বানানের ভিত্তিতেই নিবন্ধন তৈরি করা হবে।
এছাড়াও আবেদনকারীর বয়স বেশি হলে পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি ও অন্যান্য কাগজপত্র চাওয়া হতে পারে। এগুলোর স্ক্যান কপি অনলাইনে Bdris সার্ভারে জমা দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।